আলোর মনি রিপোর্ট: লালমনিরহাটের আদিতমারীতে বাঁশ কাটাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষার্থীসহ দু’পক্ষের ৮জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষ আদিতমারী থানায় অভিযোগ দিয়েছে।
বুধবার (১০ মে) আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) মোজাম্মেল হক দু’পক্ষের অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত ৫ মে বিকেলে বাঁশ কাটাকে কেন্দ্র করে কথা-কাটাকাটি হয় অভিযোগকারী আইয়ুব আলী ভাই এমদালের স্ত্রী আবেদা গং ও ভাসুর জসির গংদের। পরদিন ৬ মে সকালে পূর্ব জেরে আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা ইউনিয়নের বড়ঘরিয়া এলাকায় দুপক্ষের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শুধু বাশঁকাটা নয় দীর্ঘদিনের মনোমালিন্য দুই পরিবারের মাঝে। ৫ মে বাঁশ কাটার বিষয়ে ভাগিনা কামরুজ্জামানের সাথে ফোনে কথা-কাটাকাটি হয় মামা আইয়ুব আলীর। পরদিন শুক্রবার সকালে বিমানে করে ঢাকা থেকে কামরুজ্জামান বাড়িতে এসে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য আইয়ুব আলীর বাড়িতে যায়। এ সময় দুপক্ষের কথা-কাটাকাটি ও পরে সংঘর্ষ বাধে। এতে উভয় পক্ষের ৮জন আহত হয়।
অভিযোগে উল্লেখ করে আইয়ুব আলী বলেন, ভাগিনা কামরুজ্জামানরা দল বলে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলার উদ্দেশ্যই আমাদের বাড়িতে এসেছিলো। ঘটনার বিষয়ে না শুনেই হামলা চালায় এতে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্য মাথায় চোট দেয়, আমাকে বাঁচাতে পরিবারের অন্য সদস্যরা এগিয়ে আসায় তাদের উপর হামলা করে ৫ জনকে আহত করে। তাদের হামলায় ভাতিজি রোজিনা বেগম অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষার্থী হাতের দুইটি আঙ্গুল কেটে যায়। এ সময় বাড়িঘর ভাংচুর করে নগদটাকাসহ স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে যায় বলেও অভিযোগে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা চিল্লাচিল্লি করলে ভাগিনা কামরুজ্জামান বলেন, সারাদেশে আমার লোক আছে আমার কিছু করতে পারবে না। এ ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা শেষে ৯জনকে আসামী করে আদিতমারী থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। অপর পক্ষের পক্ষ থেকে পরিকল্পিত হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে দাবি করা হয় দ্বন্দ্বের কারণ জানা ও বিষয়টির সমাধানের জন্য আইয়ুব আলীর বাড়িতে যায় জসির গংরা। আইয়ুব আলীর বাড়িতে গেলে সরকারি চাকুরীজীবি কামরুজ্জামান (ট্যাস্ক ইন্সপেক্টর)কে ঘরে আটকের চেষ্টা করে আইয়ুব আলীর পরিবার এবং অন্যদের উপর হামলার চালায় তারা, এতে আমাদের তিনজন আহত হয়েছে। থানায় বিষয়টি জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসেছিলো। এ নিয়ে আদিতমারী থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করার দাবি তাদের।
আহত অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষার্থী রোজিনা ১১ মে দুপুরে সাংবাদিকদের জানান, কামরুজ্জামানরা হঠাৎ আমার বাবা মার উপর হামলা করলে তাদের বাঁচাতে এগিয়ে গেলে আমার উপরও হামলা চালায়। এবং কুপয়ে আমার ডান হাতের দুটি আঙ্গুল দেয়। আগামী ১৬ মে আমার পরিক্ষা আঙ্গুল এখনো ঠিক হয়নি। কিভাবে পরিক্ষার খাতায় লিখবো জানিনা। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির দাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) মোজাম্মেল হক জানান, দু’পক্ষের অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়েছে। তদন্ত চলমান আছে। তদন্ত শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।